জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ উদ্দিনের নিয়োগ গত বৃহস্পতিবার বাতিল করে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরপর একই পদে অ্যাডভোকেট মো. আশিক উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অ্যাডভোকেট মো. আশিক উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্রজনতার আন্দোলনে যে সকল তাজা প্রাণ ঝরেছে। যারা আত্মহুতি দিয়েছেন। তাদের রক্তে রঞ্জিত নতুন বাংলাদেশে মানুষের সেবা করে শহীদদের ঋণ পরিশোধ করতে চাই, বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করতে চাই। এজন্য সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন তিনি।
অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সিলেট নারী নির্যাতন আদালতে পিপি’র দায়িত্ব পালন করেছেন। এরআগে তিনি সিলেট এডিএম কোর্টের অ্যাডিশনাল পিপি ছিলেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগে সিলেটে বিভিন্ন অঙ্গনে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মগোপনে রয়েছেন। সিলেট আদালতেও আওয়ামী লীগের পিপি ছিলেন অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন। সরকার পতনের পর তিনিও অনুপস্থিত ছিলেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বাধীন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় আগের আইন কর্মকর্তাদের বাতিল করে।
গত ১৬ অক্টোবর নতুন করে সিলেটের সব আদালতে ১০৩ জন পাবলিক প্রসিকিউটর, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয় আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি করা হয় এটিএম ফয়েজ উদ্দিনকে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিবকে স্পেশাল পিপি করা হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ক্ষোভে ফুসে ওঠে এবং তাদের অপসারণ দাবি করে। এ নিয়ে জাতীয়তাবাদি আইনজীবীরা বিক্ষোভ করে এ দুই পিপির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি-অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ বহুরুপী ও বিতর্কিত ব্যক্তি। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে বিএনপিতে এসেছিলেন। বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দীর্ঘ আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। দলে তার সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা, অনুপস্থিতি ও দলীয় নেতাকর্মীদের আইনি সেবা প্রদানে তার বিতর্কিত ভূমিকার কারণে এক সময় আইনজীবী ফোরামের সভাপতির পদ থেকে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। তিনি দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রান্ট হয়ে সপরিবারে স্থায়ীভাবে আমেরিকায় পাড়ি জমান।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে তিনি পিপি হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। উপর মহলেকে ভুল বুঝিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটি বাগিয়ে নিলেও অবশেষে আইনজীবিদের আন্দোলনের মুখে এটিএম ফয়েজের নিয়োগ বাতিল করা হয়।
আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর মনিটরিং করার জন্য এটা ব্যবহার করতে পারেন, এটি গুগল এনালাইটিক এর মত কাজ করে।