আওয়ামী লীগ সরকার পতনের বাস্তবতায় জেল হত্যা দিবসে রোববার কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের কর্মসূচি না থাকার মধ্যে রোববার তিনি এই স্মারকলিপি নিয়ে যেতে চান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার বিকেল ৪টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল সংলগ্ন সাকুরা রেস্টুরেন্টের সামনে হাজির হন তাজউদ্দিন পুত্র, যিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ পান। তবে অভিমান করে মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দেন। সেই থেকে রাজনীতির বাইরে আছেন তিনি। বর্তমানে তিনি শরীর চর্চায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।
তার আসনে পরে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য হন বোন সিমিন হোসেন রিমি, যিনি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
সোহেল তাজ ৫০ থেকে ৬০ জন লোকজন নিয়ে পদযাত্রা করার কথা বললেও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ সময় সাকুরা রেস্টুরেন্টের উল্টো পাশে শতাধিক পুলিশকে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
পরে সাকুরা রেস্টুরেন্টের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাজউদ্দিন পুত্র। সেখানেই পরে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের প্রতিনিধি এসে দাবি সংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে যান।
স্মারকলিপিতে যত দাবি
প্রধান উপদেষ্টার কাছে কী কী দাবি তুলে ধরেছেন, সেই বিষয়টি সাংবাদিকদেরকে জানান সোহেল তাজ।
দাবি গুলো হল:
# যেহেতু ১০ এপ্রিল, ১৯৭১ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়, সেহেতু বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র (প্রজাতন্ত্র) হিসেবে জন্ম লাভ করে। তাই এ দিনটিকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।
# ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসকে ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে।
# জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, পরিচালক, অমর শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে ও পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
যেভাবে পালিত হল ৩ নভেম্বর
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামান ও অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাখা হয়।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্য রাতে একদল সেনা সদস্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার নেতাকে গুলি করে হত্যা করে।
আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এই দিনটিকে ‘জেলহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে। তবে গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুতির পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। আর এবার এই দিনটিতে কোনো কর্মসূচিও রাখা হয়নি।
রোববার প্রথম প্রহরে জাতীয় চার নেতার স্মরণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির কয়েকজন নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন মিলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (পুরাতন) মূল ফটকের সামনে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। এরপর দিনের বেলায় নেতাদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ করেছেন তারা।
আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর মনিটরিং করার জন্য এটা ব্যবহার করতে পারেন, এটি গুগল এনালাইটিক এর মত কাজ করে।