শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন

যে সব অভিযোগে কারাগারে ছিলেন মামুনুল হক

ডেস্ক রিপোর্ট / ৬৭ মোট শেয়ার
হালনাগাদ : শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
যে সব অভিযোগে কারাগারে ছিলেন মামুনুল হক

তিন বছর কারাভোগের পর হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর কারাগারে থেকে মুক্তি পান তিনি।

তিন বছর আগে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

গ্রেপ্তার হওয়ার ১৫ দিন আগে ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। খবর পেয়ে হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। সেদিন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে, গাড়ি ভাঙচুর করে সড়ক অবরোধ করেন। বেশকিছু সময়ের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে রয়্যাল রিসোর্টের ব্যবস্থাপক লাল মিয়া জানিয়েছিলেন, দুপুরের দিকে মামুনুল হক তাদের রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে ওঠেন। এরপর সেখানে অনেক লোকজন জড়ো হয়। ঘটনাস্থলে ইউএনও, পুলিশসহ অনেকে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মামুনুল হক রিসোর্টের ওই রুমেই আটকা ছিলেন। এ খবর পেয়ে হেফাজতে ইসলামের লোকজনও লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে ভিড় জমায়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সেখানে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করেন মামুনুল হক।

পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন তার সঙ্গে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া নারী। যদিও ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।

এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ অর্ধশতাধিক মামলা হয়। পরে সেসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে এসব মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন। অর্থাৎ ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারেই ছিলেন মামুনুল হক।

২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতায় দেশে ২০ জনের মৃত্যুর হয়। এসব ঘটনার মামুনুল হককে মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের বেশকিছু নেতা জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার অর্থ ভাগবাটোয়ারা করে নিতেন। শুধু মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা নয়, যাত্রাবাড়ী, বারিধারা, লালবাগের বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে তারা অর্থ নিতেন। এসব মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের হিসাবে ব্যাপক গরমিল পাওয়া যায়।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য থেকে মাদ্রাসার নামে যেসব অনুদান এসেছে, সেগুলোর তারা ভাগবাটোয়ারা করে নিতেন।

তাকে (মামুনুল হক) গ্রেপ্তারের পর ওই সময় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, মামুনুল হক ২০১৩ সালের সহিংসতা এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায়ও নিজে সম্পৃক্ত ও উসকানি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেছিলেন, মোদিবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এই তাণ্ডবের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে নেপথ্যে ছিলেন মামুনুল হক।

উল্লেখ্য, নানা অভিযোগে অভিযুক্ত মামুনুল হককে ২০২৩ সালের হেফাজতের কমিটিতে কোনও পদ দেওয়া হয়নি। তবে, হেফাজতের পক্ষ থেকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক বৈঠকে মামুনুল হকসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি দাবি জানানো হয়।


এই বিভাগের আরো খবর

আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর মনিটরিং করার জন্য এটা ব্যবহার করতে পারেন, এটি গুগল এনালাইটিক এর মত কাজ করে।