বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, জামায়াতের সঙ্গে এই মুহূর্তে তাদের কোনও জোট বা বোঝাপড়া নেই। সরকার পতনের আন্দোলনের সময়ে জামায়াত বিএনপির সঙ্গে ‘যুগপত আন্দোলন’ করলেও এরপর আর তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
ইসলামি শাসন ব্যবস্থা প্রণয়নের যে তৎপরতা জামায়াত শুরু করেছে, ‘বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না’ বলে আগেই মন্তব্য করেছেন ফখরুল। তার কথায়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসুক, একটি নির্বাচিত সরকার গঠিত হোক— এটাই মানুষ চান। এমনকি জামায়াতের নানা প্রস্তাব এবং তৎপরতা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মন্তব্য করেছেন, “যারা একটি আসনেও ভোটে জিততে পারবেন না, তারা এখন বড় বড় কথা বলে বেড়াচ্ছেন। সংবাদমাধ্যমও ফলাও করে সেইসব ছাপাচ্ছে!”
মির্জা ফখরুল বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ‘অনির্বাচিত অন্তর্র্বতী সরকার’ আদতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, যাদের কাজ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া। কিন্তু, তার অভিযোগ, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের পথরেখা নিয়ে একটি কথাও বলছেন না। বিএনপির অন্য নেতারাও দ্রুত নির্বাচনের জন্য ইউনূসের কাছে দাবি জানাচ্ছেন।
গতকাল শনিবার ঢাকার যমুনা অতিথিশালায় নিজের দফতরে রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠকে ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। এই বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে ‘ব্যবস্থা সংস্কারের’ প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব গত ২৪ অগস্ট বলেছিলেন— “মুষ্টিমেয় কিছু লোকের সংস্কারে আমরা বিশ্বাসী নই। নির্বাচিত সরকার গঠনেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তারাই প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে।”
গত ৮ আগস্ট ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিএনপি নেতৃত্ব সেই সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু ক্রমেই বিএনপির ধারণা হয়েছে, বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে না। বরং জামায়াতই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে উপদেষ্টাদের কাছে। নিয়োগ এবং বদলির ক্ষেত্রেও জামায়াতের পছন্দই গুরুত্ব পাচ্ছে।
অপরদিকে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফেরানোর বিষয়ে ইউনূস সরকারের কোনো তৎপরতা নেই। আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ঢালাও খুনের মামলা দেওয়া এবং আদালতে তাদের মারধর খাওয়ানো নিয়েও সরব হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। তারেক জিয়াও বলেছেন, “আগামী নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম কঠিন পরীক্ষা।”