শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২১ পূর্বাহ্ন

মেট্রোর ওয়ার্কশপে ডাকাতি, যা জানাল পুলিশ

ডেস্ক রিপোর্ট / ৫৭৯ মোট শেয়ার
হালনাগাদ : শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪
মেট্রোর ওয়ার্কশপে ডাকাতি, যা জানাল পুলিশ

তিন দিন পার হলেও রাজধানীর রূপনগরে মেট্রোরেলের কাজে নিয়োজিত চায়না সিনো হাইড্রো কোম্পানির ওয়ার্কশপে ডাকাতির ঘটনার কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রূপনগর থানা পুলিশ জানিয়েছে, তাদের তদন্ত চলমান।

এ বিষয়ে রূপনগর থানার ওসি জানে আলম বলেন, মেট্রোরেলের ওয়ার্কশপে ডাকাতি হয়নি, চায়না কোম্পানির একটি হাউজে ডাকাতি হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তবে এখনো কাউকে শনাক্ত বা আটক করা যায়নি। যেগুলো ডাকাতি হয়েছে সেগুলো সব পুরনো মালামাল। সিসি ক্যামেরা যাচাইসহ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে পুলিশ।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর রূপনগর এলাকার বেড়িবাঁধ সড়কের বোট ক্লাবের উল্টোপাশে অবস্থিত ওয়ার্কশপটিতে কর্মচারীদের বেঁধে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর কোন থানায় মামলা হবে তা নিয়ে তুরাগ ও রুপনগর থানার মধ্যে ঠেলাঠেলি শুরু হয়। শেষমেষ রূপনগর থানা মামলা নেয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ৮ থেকে ১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতি, দেশি অস্ত্রসহ ওয়ার্কশপে ঢুকে পড়ে। তারা গেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চান মোহনকে হাত-পা বেঁধে সবাইকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এ সময় সবার কাছে থাকা আনুমানিক ১ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। ডাকাতরা সবাই বরিশাল এবং ঢাকার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। তারা সবাই লম্বা প্রকৃতির, একজন মোটা এবং অন্যরা ৫ ফুট ৬ থেকে ১০ ইঞ্জির মতো লম্বা। ডাকাতদের মধ্যে দীর্ঘকায় দেহের ডাকাতকে সবাই ‘স্যার, স্যার’ ডাকে এবং আমাদের বলে, আমরা থানা থেকে এসেছি।

এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওয়ার্কশপের ভেতরে একটি গাড়ি ঢোকার শব্দ শুনতে পান শ্রমিকরা। এর কিছুক্ষণ পরপর ওয়ার্কশপের ভেতরে কিছু ভাঙার এবং গাড়িতে মালপত্র তোলার শব্দ শুনতে পান। এভাবে ডাকাতরা রাত ১১টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত ওয়ার্কশপের ভেতরে ডাকাতি করে চলে যায়। চলে যাওয়ার সময় সব শ্রমিককে একটি কক্ষে আটকে দরজার সিটিকিনি বাইরে দিয়ে আটকে রেখে যায়। এ সময় তারা শ্রমিকদের বলে যায়, আমরা চলে যাচ্ছি, তোদের সবার মোবাইল ফোন একটি রুমের ভেতরে আছে, আমরা তোদের মোবাইল নেব না, নিলে ধরা খেয়ে যাব।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডাকাতরা চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে, আমরা মুখ দিয়ে একে অন্যের বাঁধন খুলি এবং রুমের সিলিং দিয়ে অন্যরুমে গিয়ে আমাদের দরজার বাইরে দিয়ে লাগানো সিটকিনি খুলে সবাই বাইরে বের হয়ে আসি। এরপর একটি রুমের ঝুড়ির ভেতর আমাদের সবার মোবাইল দেখতে পাই।

মামলায় লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী ডাকাতি হওয়া মালপত্রের মধ্যে রয়েছে এক লাখ আশি হাজার টাকা মূল্যের ১৮টি ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারি, ৪ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের গাড়ির ও ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ, প্রায় ১২ লাখ টাকা মূল্যের দুই ধরনের কপার স্ট্যান্ডার্ড ওয়াব ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ২ হাজার ৫৯২ পিস মিডিল ক্লাম (সাইজ ৬০ মিমি), ১ লাখ ৪৬ হাজার টাকার ৫ হাজার ৭৬০টি ইনডক্লাম, ৪ হাজার ৩৯৮ টাকার ১ হাজার ৬১৬ পিস বোল্ট, ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ব্যাটারি চার্জার, ৩৫ হাজার টাকার ওয়েল্ডিং মেশিন এবং কর্মচারীদের কাছে থাকা নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ২১ লাখ ৫২ হাজার টাকার মালপত্র নিয়ে গেছে ডাকাতরা।


এই বিভাগের আরো খবর